ইদানিং দেখিতেছি পুরুষ নিজেকে বড়ই হীনমন্য প্রাণী ভাবিয়া নীরব হইয়া থাকিতেছেন। আমার এই সন্দেহ ক্রমশ নিঃসংশয় হইতেছে। পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা সুদর্শন এবং উন্নত প্রাণী যে পুরুষগণ এসমন্ধে তাঁহারা অবগত আছেন কি না, আমি নিশ্চিত নই। নারীর কাছে পুরুষকে নত হইতে হয় প্রকৃতির স্বভাবগত এবং সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত যৌন সম্বন্ধীয় ব্যাপার লইয়া, তবে রূপের প্রসঙ্গে প্রকৃতির দিকে তাকাইলে দেখিতে পাইবেন সর্বাধিক সুন্দর আকৃতি পাইয়াছেন পুরুষ। ইহা নিতান্ত আমার ব্যক্তিগত মতামত নহে, কিম্বা আমি ইহা বলিয়া আমার পুরুষআকৃতির দম্ভ করিতেছি না, এবং নারী জাতিকে হেয় করিবার উদ্দেশ্যেও এই বিবরণী প্রস্তুত করা হয় নাই। তবে নারীর সৌন্দর্য যে পুরুষের তুলনায় কম ইহা আমার স্পষ্ট বক্তব্য।
আমরা সিংহ বলিতে পুরুষ সিংহকে’ই বুঝিয়া লই, নারী সিংহের ছবি দেখিলে ছোট্ট শিশু তাহাকে বাঘ আকৃতির কিছু একটা ভাবিয়া লইতে পারেন।
এমনকি মুরগীর চেহারার দিকেও তাকাইলে দেখিবেন তাঁহার চেহারা মোরগের ধারের কাছেও নাই। মুরগী ডিম দেন, তথাপি মোরগের মাংসও কম সুস্বাদু নহে, আমি গুণের বিচার করিতেছি না। গুণের বিচারে কাহারো মান কম নহে। আমি রূপের কথা বলিতে চাহিতেছি আজ। কেননা রূপ লইয়াই যতো বিভ্রাট ঘটিয়া থাকে। আমি পূর্বপত্রে বলিয়াছি, কেহ এক্স-রে মেশিন বা পরিগাণনিক স্তরচিত্রণ কল লইয়া বিচরণ করেন না যে তিনি কাহারো অভ্যন্তরীণ রূপ দেখিতে পাইবেন। অন্য প্রাণীদের কথা বলিতে পারিব না, তবে সর্বপ্রথমে রূপ খুঁজিয়া লয় মানুষের নেত্র এবং রূপের দিক হইতেও পুরুষই শীর্ষে থাকেন। ইহা বলিবার লাগিয়াই আজিকার এ পত্রবিশেষ।
ময়ূরের দিকে তাকাইলে দেখিবেন নারী ময়ূরের বিশেষ কোনো রূপ নাই। অথচ পুরুষ ময়ূরের চেহারা সবচাইতে উন্নত। মেয়ে ময়ূরের খুব একটা দৃষ্টিনন্দন পালক নাই, পুরুষ ময়ূরের পালক অত্যাধিক সুন্দর এবং আমরা ময়ূর বলিতে পালক-মেলানো যে প্রাণীটিকে বুঝিয়া থাকি, তাহা পুরুষ ময়ূরকে’ই নির্দেশ করে।
মুরগী, সিংহী, ময়ূরী, ইহাদের দেখিলে বুঝিবেন প্রকৃতি পুরুষকে সর্বাপেক্ষা সুন্দর আকৃতি দান করিয়াছেন। আমি বলিতেছি, কেহ যদি রূপের বিচার করিতে নিক্তি লইয়া বসেন, তাহা হইলে পুরুষ বিজয়ী হইবেন।
নারীর ত্যাগ, মহিমা, তাঁহার সন্তান ধারণ করিবার গুণাবলি লইয়া মন্তব্য করিতে আসি নাই আজ। আজিকে আমি রূপের কথা বলিতে চাহিয়াছি। পুরুষ শুধু নারী অপেক্ষা অধিক শক্তি ও পেশী লইয়া জন্মগ্রহণ করেননি, তিনি নারী অপেক্ষা সুন্দরতম রূপও গ্রহণ করিয়াছেন। রূপের দিক হইতে ইহা প্রমাণিত যে প্রকৃতি পুরুষকে সর্বাপেক্ষা উন্নত আকৃতি দান করিয়াছেন। অতএব রূপের বিচারে পুরুষকে হেয় করা হইতে বিরত থাকিয়া জ্ঞানের পরিচয় রাখিয়া সংযত হইলে বোধ করি মন্দ হইবে না।
নাভিদ ইবনে সাজিদ নির্জন, প্রধান সম্পাদক, বগুড়া ট্রিবিউন
২৮ শ্রাবণ ১৪২৮ । ১২ আগস্ট ২০২১ । বগুড়া
ইমেইল : navidnirjon@gmail.com