আলোকিত মানুষ আব্দুর রাজ্জাক মাস্টার

আলোকিত মানুষ আব্দুর রাজ্জাক মাস্টার

আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল

আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলায় মাছিরপাড়া গ্রামে ১৯৩৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। সারিয়াকান্দির চন্দনবাইশা কলেজ এবং বগুড়া আজিজুল হক কলেজের ছাত্র ছিলেন তিনি। পড়ালেখা শেষে মাছিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। তখন বিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিলো খুবই কম, কয়েকটি গ্রাম মিলে মাত্র একটি বিদ্যালয় ছিলো, দূর দূরান্তর থেকে ছাত্র ছাত্রীরা পড়তে আসতো। গ্রাম অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতেই তাঁর জীবনের আধেক সময় কেটেছে তাই গ্রামের মানুষজন তাঁকে ভালোবেসে তাঁর নামের পাশে ‘মাস্টার’ শব্দটি জুড়ে দিয়েছেন। রাজ্জাক মাস্টার নামটিও গ্রামবাসীর শ্রদ্ধা-ভালোবাসার অন্তস্থলে পৌছে গেছে। প্রায় দুই যুগ আগে সরকারি স্কুলের চাকুরি থেকে অবসরপ্রাপ্ত আব্দুর রাজ্জাক এখন ৮০বছর বয়সে পৌঁছলেও এখনো সামাজিক উন্নয়মূলক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। গ্রামের মসজিদ, ইদগাহ মাঠ, কমিউনিটি ক্লিনিক সহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের সভাপতি তিনি। কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল নির্মোহ, নিঃস্বার্থভাবে তৃণমূলে মানুষের জন্য কাজ করেছেন।
 
আব্দুর রাজ্জাক মন্ডলের দাদা জামাতুল্লাহ্ মন্ডল ছিলেন জমিদারের তহসিলদার তিনি সাদা ঘোড়ায় চড়ে যাতায়াত করতেন এবং প্রচন্ড সৌখিন মানুষ ছিলেন, গ্রামের গরীব দুখী মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়াতেন তিনি। আব্দুর রাজ্জাক মন্ডলের পিতা আব্দুল কুদ্দুস মন্ডল ছিলেন সারিয়াকান্দির সবচেয়ে উদারমনা দানশীল মানুষদের একজন। আব্দুর রাজ্জাক মন্ডলের ছোট ভাই প্রফেসর আবুল কালাম মন্ডল সরকারী আজিজুল হক কলেজের বোটানিক্যাল বিভাগের প্রধান এবং পরবর্তীতে সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। তাঁর মামাতো ভাই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ বি এম হুমায়ুন কবীর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) মহাপরিচালক (সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিস) হিসেবে কর্মরত আছেন। আব্দুর রাজ্জাক ইংল্যন্ডের মেয়র ডা: আলতাফুর রহমানের সহপাঠি ছিলেন।
 
চার সন্তানের জনক আব্দুর রাজ্জাক তাঁর শিক্ষকতার সামান্য বেতনে সন্তানদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়ালেখা করিয়েছেন। তাঁর দুই ছেলের দুজনেই বিসিএস ক্যাডার। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়-এ ডিভিএম -ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের মেধাবী ছাত্র তাঁর বড় ছেলে ডা: মো: সাজেদুল ইসলাম (ইকবাল) বিসিএস-১৯, বর্তমানে প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরাধীন বগুড়া জেলার কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজীতে অনার্স, মাস্টার্স করে ছোট ছেলে আই.আর.এম. সাজ্জাদ হোসেন (রাসেল) বিসিএস-২৪, সরকারি কলেজের ইংরেজী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স করে ছোট মেয়ে শামীমা আক্তার (লিপি) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। বড় মেয়ে ফেরদৌসী আক্তার (রুমি) শিক্ষিত হলেও তিনি গৃহিণী।
 
মানুষ গড়ার কারিগরদের একজন আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল এখনো একটি উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন। একদিন এইদেশ সত্যিকারের সোনার বাংলাদেশ হয়ে উঠবে এমন তাঁর আশা।
 
জীবন সায়াহ্নে এসে তাঁর এবং পরিবারের সবার সুস্থতা, দীর্ঘায়ু এবং সকলের মঙ্গল কামনা করে সৃষ্টিকর্তার কাছে সবার দোয়া প্রত্যাশা করেছেন তিনি।
 

খবরটি শেয়ার করুন...

Comments are closed.




© All rights reserved © 18-2023 boguratribune.com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com